
১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ – রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার মহাপুরুম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা। পিতা চিত্ত কিশোর চাকমা ও মাতা সুলতানমিনি দেওয়ান এর সন্তান হিসাবে। ভাই-বোনদের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
ডাকনাম: মনজু
তাঁর শৈশব কেটেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশে। তাঁর গ্রাম পরে কাপ্তাই বাঁধের পানিতে তলিয়ে যায়, যা তাঁর রাজনৈতিক চেতনার উন্নয়নে গভীর প্রভাব ফেলে।


প্রাথমিক শিক্ষা: মহাপুরুম জুনিয়র হাই স্কুলে শুরু হয়।
১৯৫৮: রাঙামাটি গভার্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ।
১৯৬০: চট্টগ্রাম গভার্নমেন্ট কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট।
১৯৬৫: একই কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন।
১৯৬৮: কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে B.ED।
১৯৬৯: চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে LLB সম্পন্ন করে চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশনে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন।
১৯৬৬: দিঘীনালা হাই স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৬৮: চট্টগ্রাম রেলওয়ে কলোনি হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন।
১৯৬৯: আইন পেশায় প্রবেশ করেন এবং সামাজিক আন্দোলনে আরও বেশি সম্পৃক্ত হন।

১৯৫৬: ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ।
১৯৫৭: প্রথম জুম্ম ছাত্র সম্মেলনের অন্যতম সংগঠক।
১৯৫৮: পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন।
১৯৬০: জুম্ম ছাত্র সমাজে নেতৃত্ব শুরু করেন।
১৯৬২: জুম্ম ছাত্র সম্মেলনের প্রধান সংগঠক হিসেবে নেতৃত্ব দেন।
১৯৬৩: কাপ্তাই বাঁধবিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার হন (১০ ফেব্রুয়ারি)।
১৯৬৫: মুক্তি পান (৮ মার্চ)।
১৯৬৯: গঠন করেন "CHT Election Organizing Committee"।
১৯৭০: পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (MPA) নির্বাচিত হন।
১৯৭১: স্বাধীন বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসনের দাবি তোলেন।
১৯৭২:
১৫ ফেব্রুয়ারি: গঠন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (PCJSS)।
শেখ মুজিবুরকে ৪-দফা দাবিপত্র দেন।
৩১ অক্টোবর: সংবিধানে “বাঙালি” পরিচয়ের বিরুদ্ধে গনপরিষদ থেকে ওয়াকআউট করেন।
১৯৭৩: চট্টগ্রাম হিলট্র্যাক্টস-১ আসনে এমপি নির্বাচিত হন।
১৯৭৪:
১৫ ফেব্রুয়ারি: গঠন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (PCJSS)।
শেখ মুজিবের আহ্বানে বাকশালে যোগ দেন।
১৬ আগস্ট ১৯৭৫: সামরিক শাসনের পর আত্মগোপনে যান।
১৯৭৫: PCJSS-এর সভাপতি হন; গঠন করেন মহিলা সমিতি।
১৯৭৭: দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৮২: তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনেও পুনঃনির্বাচিত।
এই সময়ে শান্তি বাহিনী গঠন করে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হয়।

বিবাহ: ১৯৭১ সালে পক্ষজিনী চাকমাকে বিয়ে করেন।
সন্তান:
ভাই-বোন:

খাগড়াছড়ির পঞ্চারী উপজেলার খেদারাছড়া ঝর্ণার উৎসে বিশ্বাসঘাতক হামলায় বিদ্রোহী PCJSS গ্রুপের হাতে শহীদ হন। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এক সংগ্রামী অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে, কিন্তু তাঁর আদর্শ থেকে যায় প্রজন্মের জন্য।









মৃত্যুর পরও জীবন্ত নেতা ১৯৮৩ সালে লারমা নিহত হলেও তাঁর নাম আজও পাহাড়ি রাজনীতিতে অমর। প্রতি বছর ১০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানে মানুষ মোমবাতি জ্বালায়, সমাবেশ করে। একজন বৃদ্ধা নারী এক স্মরণসভায় বলেছিলেন—“লারমা ছিল আমাদের মাটি, আমাদের ভরসা। ও চলে গেছে, কিন্তু ওর কথা আজও আমাদের কানে বাজে।” লার্মার দর্শনের শক্তি লারমা শিখিয়েছিলেন—…
Jumjournal
August 31, 2025
লড়াইয়ের দুই দশক এম এন লারমা নিহত হওয়ার পর তাঁর ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লার্মা) PCJSS–এর নেতৃত্ব নিলেন। ১৯৮০–৯০ দশকে পাহাড়ে সংঘাত ভয়াবহ আকার ধারণ করল। গ্রামে গ্রামে গেরিলা যুদ্ধ, সেনাবাহিনীর অভিযানে অসংখ্য প্রাণহানি। হাজারো পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় শরণার্থী হয়ে রইল। পাহাড়ি জনগণের জীবনে তৈরি হলো দীর্ঘ আতঙ্কের রাত।…
Jumjournal
August 31, 2025
ভেতরের বিরোধ দীর্ঘদিন গোপন লড়াই চালাতে গিয়ে PCJSS–এর ভেতরেও মতভেদ বাড়তে লাগল। কেউ চাইত সশস্ত্র সংগ্রাম আরও তীব্র হোক। কেউ চাইত রাজনৈতিক সমঝোতার পথ খোলা থাকুক। আবার কেউ লার্মার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে লাগল। এই বিভাজন ধীরে ধীরে মারাত্মক আকার নিল। ১৯৮২ এর ভাঙন ১৯৮২ সালে PCJSS ভেঙে কয়েকটি অংশে বিভক্ত হলো। এর মধ্যে একটি…
Jumjournal
August 31, 2025
বাকসাল, আন্ডারগ্রাউন্ড ও এক নেতার দ্বন্দ্ব বাকসালের প্রেক্ষাপট ১৯৭৪–৭৫ সময়টা বাংলাদেশের জন্য ছিল ভয়াবহ অস্থিরতার। দুর্ভিক্ষ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, এবং বিরোধী দলগুলোকে দমন করার কৌশল হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে ঘোষণা করলেন বাকসাল (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ)—একদলীয় শাসনব্যবস্থা। এই নতুন ব্যবস্থায় সব রাজনৈতিক দলকে ভেঙে বাকসালে যোগ দিতে বাধ্য করা হলো। এম এন…
Jumjournal
August 31, 2025
চার দফা দাবি সরকার মানেনি। সংবিধানে পাহাড়িদের জন্য আলাদা কোনো স্বীকৃতি এল না। ফলে পাহাড়ি সমাজে আস্থাহীনতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল। লারমাতখন বুঝলেন—সংগঠন ছাড়া অধিকার আদায় সম্ভব নয়। তাই তিনি গড়ে তুললেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (PCJSS)। পিসিজেএসএস গঠনের গল্প ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেলারমা গোপনে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে ঘুরতে শুরু করেন। তিনি যুবকদের ডাকলেন—“আমরা যদি এক না…
Jumjournal
August 31, 2025
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশ নতুন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নিল। চারদিকে স্বাধীনতার উল্লাস, নতুন সংবিধান তৈরির ব্যস্ততা। কিন্তু পাহাড়ি মানুষের চোখে তখনো কাপ্তাই বাঁধের ক্ষত শুকায়নি। এই প্রেক্ষাপটেই এম এন লারমা বুঝলেন—যদি এখনই পাহাড়িদের অধিকার সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত না করা যায়, তবে ভবিষ্যতে সমস্যা আরও তীব্র হবে। তাই তিনি একদিন কলম তুলে নিলেন। লিখলেন…
Jumjournal
August 31, 2025
Manabendra Narayan Larma (1939 – 10 November 1983) was a visionary leader, political activist, and the founding president of the Parbatya Chattagram Jana Samhati Samiti (PCJSS). He dedicated his life to fighting for the rights and recognition of the indigenous peoples of the Chittagong Hill Tracts.
Assassinated: November 10, 1983
M.N. Larma was assassinated under mysterious political circumstances. His death marked a tragic turning point in the struggle for indigenous autonomy and cultural preservation.
“You cannot impose your national identity on us. I am not Bengali, I am Chakma.”
©Jumournal-2025
M. N. LARMA
BACK TO TOP